জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসাবে খ্যাত গোপালগঞ্জ-১ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মুহাম্মদ ফারুক খানের সঙ্গে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী কাবির মিয়ার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে রয়েছেন মুকসুদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কাবির মিয়া।
মুহাম্মদ ফারুক খান ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকে এ পর্যন্ত তিনি এ আসন থেকে মোট পাঁচবার সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
গত ১৫ বছরে তিনি তার নির্বাচনি এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেন। এর মধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়ন, দুটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণ, ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, তিন শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সর্বাধুনিক ভবন নির্মাণ, হাট-বাজার, মসজিদ ও মন্দিরের উন্নয়ন, মহাসড়ক, অঞ্চলিক সড়ক, ব্রিজ কালভার্ট, বীরমুক্তিযুদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস নির্মাণ, রেল যোগাযোগ স্থাপন, উপজেলা পরিষদ ভবন নির্মাণ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে সংসদ-সদস্য হিসেবে কাজ করার সুবাদে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। ফলে মুহাম্মদ ফারুক খান এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয়।
অপরদিকে, সাধারণ ভোটারদের কাছে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাবির মিয়াও বেশ জনপ্রিয়। আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান হওয়ার পরও গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি তিনি। ফলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ওই পদে নির্বাচন করেন এবং বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে পরাজিত করে মুকসুদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তিনি। কিন্তু মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে প্রার্থিতা বাতিল হয় কাবির মিয়ার। পরে আপিলের মাধ্যমে আবার তিনি তার প্রার্থিতা ফিরে পান।
এতে তার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। নতুন করে উদ্যাম ফিরে পান তারা। স্বতন্ত্র প্রার্থী কাবির মিয়ার কর্মী-সমর্থকদের ধারণা, গত উপজেলা নির্বাচনের মতো এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী মুহাম্মদ ফারুক খানের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাবির মিয়ার তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
দীর্ঘদিন ধরে সংসদ-সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করলেও বর্তমানে মুহাম্মদ ফারুক খানের জনপ্রিয়তা অনেক হ্রাস পেয়েছে। ফলে দুই প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের রিজার্ভ ভোট ভাগ হয়ে যাবে। পাল্টে যাবে এবারের সমীকরণ। উপজেলা নির্বাচনের মতো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও কোনো অঘটন ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।